Header Ads

ad728
  • Breaking News

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর জীবনী

                         
                               রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দক্ষিণ বিশ্বের একজন অন্যতম কবি।
    রবীন্দ্রনাথের জন্ম কলকাতার এক পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে। মাত্র আট বছর বয়সে প্রথম কবিতা রচনা করেন তিনি। ১৮৮৭ সালে মাত্র ষোলো বছর বয়সে “ভানুসিংহ” ছদ্মনামে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। সেই বছরই রচনা করেন প্রথম ছোটোগল্প ও প্রথম নাটক। তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের সমর্থন করতেন। রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক মতাদর্শ বিমূর্ত রয়েছে বহুবর্ণী সৃষ্টিকর্ম ও প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর মধ্যে।

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (বাংলা ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮) (খ্রিস্টীয় ৭ মে, ১৮৬১ – ৭ অগস্ট, ১৯৪১) ছিলেন বাংলা তথা ভারতের বিশিষ্ট কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সংগীতস্রষ্টা, নট ও নাট্যকার, চিত্রকর, প্রাবন্ধিক, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তিনি বাংলা ভাষার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক। রবীন্দ্রনাথকে ‘গুরুদেব’, ‘বিশ্বকবি’ ও ‘কবিগুরু’ অভিধায় অভিহিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁর মোট ৯৫টি ছোটগল্প এবং ১৯১৫টি গান যথাক্রমে ‘গল্পগুচ্ছ’ ও ‘গীতবিতান’ সংকলনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত এবং গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২টি খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য ১৯ খণ্ডে ‘চিঠিপত্র’ সংকলনে ও অন্য চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি প্রায় দু’হাজার ছবিও এঁকেছিলেন। তাঁর রচনা আজ বিশ্বের নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে ও হচ্ছে।

    রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম কন্যার মৃত্যু হয় নাম রাখার আগেই। সেই হিসেবে ১৫ জন ভাইবোনের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন কনিষ্ঠতম অগ্রজ। রবীন্দ্রনাথ সুস্থ-সবল ও দীর্ঘায়ু সম্পন্ন হলেও তাঁর অনেক ভাই-ই ছিলেন অসুস্থ, মস্তিস্ক বিকৃত ও স্বল্পায়ুর অধিকারী। দেশভ্রমণের নেশায় রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর উত্তর ভারত, ইংল্যান্ডসহ বছরের অধিকাংশ সময় কলকাতার বাইরে কাটাতেন। এ কারণে তিনি
    ১.দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭-১৯০৫)
    ২. রাজা রাম মোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩)
    ৩.সারদা দেবী (১৮২৪-৭৫)
    জীবনের প্রথম দশটি বছর পিতার সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পাননি। ধনাঢ্য পরিবারে জন্ম নিলেও পিতামাতার  ভালোবাসায় অতিবাহিত হয়নি তাঁর শৈশব। তাইতো ভৃত্যদের কড়া অনুশাসনে কাটাতে হয়েছিল ছেলেবেলা। রবীন্দ্রনাথসহ অন্য সব শিশু-বালকের দিন কাটত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির বাইরে দোতলায় দক্ষিণ-পূর্ব কোণের ঘরটিতে।

    রবীন্দ্রনাথের ভাইবোনেরা তাঁকে আদর করে রবি বলে ডাকতেন। উজ্জ্বল বর্ণের শিশুদের সবাই একটু বেশিই পছন্দ করে। এটা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। রবীন্দ্রনাথ তাঁর অন্যান্য সহোদরদের তুলনায় অতটা উজ্জ্বল চেহারার অধিকারী ছিলেন না। তাঁর বড় দিদি সৌদামিনী দেবী তাঁকে উদ্দেশ্য করে প্রায়ই বলতেন, আমার রবি শ্যাম বর্ণের হতে পারে, কিন্তু জ্ঞান-গরিমার উজ্জ্বলতায় সে অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে।

    প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন বিহারীলাল চক্রবর্তীর (১৮৩৫-১৮৯৪) অনুসারী কবি। তাঁর ‘কবিকাহিনী’ (১৮৭৮), ‘বনফুল’ (১৮৮০) ও ‘ভগ্নহৃদয়’ (১৮৮১) কাব্য তিনটিতে বিহারীলালের প্রভাব সুস্পষ্ট। ‘সন্ধ্যাসংগীত’ (১৮৮২) কাব্যগ্রন্থ থেকে প্রকাশিত হতে লাগল কবি রবীন্দ্রনাথের নিজের বাণী। এই পর্বের ‘সন্ধ্যাসংগীত’, ‘প্রভাতসংগীত’ (১৮৮৩), ‘ছবি ও গান’, ‘কড়ি ও কোমল’, ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’ (১৮৮৪) কাব্যগ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু ছিল মানব হৃদয়ের বিষণ্ণতা, আনন্দ, মর্ত্যপ্রীতি ও মানবপ্রেম। ১৮৯০ সালে প্রকাশিত ‘মানসী’ এবং তার পর প্রকাশিত ‘সোনার তরী’ (১৮৯৪), ‘চিত্রা’ (১৮৯৬), ‘চৈতালি’ (১৮৯৬), ‘কল্পনা’ (১৯০০) ও ‘ক্ষণিকা’ (১৯০০) কাব্যগ্রন্থে ফুটে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের প্রেম ও সৌন্দর্য সম্পর্কিত রোম্যান্টিক ভাবনা। ১৯০১ সালে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার পর রবীন্দ্রনাথের কবিতায় আধ্যাত্মিক চিন্তার প্রাধান্য লক্ষিত হয়। এই চিন্তা ধরা পড়েছে ‘নৈবেদ্য’ (১৯০১), ‘খেয়া’ (১৯০৬), ‘গীতাঞ্জলি’ (১৯১০), ‘গীতিমাল্য’ (১৯১৪) ও ‘গীতালি’ (১৯১৪) কাব্যগ্রন্থে। ১৯১৫ সালে বেজে উঠল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা। আধ্যাত্মলোকের পরিবর্তে পুনরায় মর্ত্যলোকের দিকে তাকালেন কবি। এই নবদৃষ্টির ফসল ‘বলাকা’ (১৯১৬)। এরপর ‘পলাতকা’ (১৯১৮) কাব্যে গল্প-কবিতার আকারে তিনি নারীজীবনের সমসাময়িক সমস্যাগুলি তুলে ধরেন। এরপর ‘পূরবী’ (১৯২৫) ও ‘মহুয়া’ (১৯২৯) কাব্যগ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ আবার ফিরে এলেন প্রেমের আশ্রয়ে। জীবনের শেষ দশকে কবিতার আঙ্গিক ও বিষয়বস্তু নিয়ে কয়েকটি নতুন পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রথমে প্রকাশিত হল ‘পুনশ্চ’ (১৯৩২), ‘শেষ সপ্তক’ (১৯৩৫), ‘পত্রপুট’ (১৯৩৬) ও ‘শ্যামলী’ (১৯৩৬) নামে চারটি গদ্যকাব্য। তারপর জীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে ‘রোগশয্যায়’ (১৯৪০), ‘আরোগ্য’ (১৯৪১), ‘জন্মদিনে ‘(১৯৪১) ও ‘শেষ লেখা’ (১৯৪১, মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত) কাব্যে মৃত্যু ও মর্ত্যপ্রীতিকে একটি নতুন আঙ্গিকে পরিস্ফুট করেছিলেন তিনি। শেষ কবিতা ‘তোমার সৃষ্টির পথ’ মৃত্যুর আট দিন আগে মৌখিকভাবে রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।


    ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতার এক ধনাঢ্য সংস্কৃতিবান পিরালি ব্রাহ্মণ পরিবারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম। বাল্যে প্রথাগত শিক্ষা গ্রহণে তিনি অসম্মত হয়েছিলেন। তাই গৃহশিক্ষক নিযুক্ত করে বাড়িতেই তাঁর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। মাত্র আট বছর বয়সে কাব্যরচনায় প্রবৃত্ত হন তিনি। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। কবিতাটির নাম ছিল ‘অভিলাষ’। এটিই ছিল তাঁর প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথম ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেন। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে তিনি পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে চলে আসেন পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে। এখানেই ব্রহ্মচর্যাশ্রম স্থাপন করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। ১৯০২ সালে তাঁর পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে জড়িয়ে পড়েন বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনে। ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথই এশিয়া মহাদেশের প্রথম নোবেলজয়ী সাহিত্যিক। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইট উপাধি প্রদান করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীনিকেতন। এই সংস্থা গ্রামীণ সমাজের সার্বিক উন্নয়নের কাজে আত্মনিয়োগ করে। ১৯২৩ সালে শান্তিনিকেতনেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বভারতী বিদ্যালয়। দীর্ঘজীবনে বহুবার বিদেশভ্রমণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রচার করেছিলেন সৌভ্রাতৃত্ব ও বিশ্বমানবতার বাণী। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

    এই বিশ্বনন্দিত কবি দক্ষিণ এশিয়ায় সাহিত্যে সর্বপ্রথম নোবেলবিজয়ী হন।
    এক নজরে----


    জন্ম তারিখ৭ মে ১৮৬১
    জন্মস্থানজোড়াসাঁকো, কোলকাতা, ভারত
    মৃত্যু৭ অগাস্ট ১৯৪১
         
    নোবেল অর্জন১৯১৩ সালে (গীতাঞ্জলি)
    কাব্যগ্রন্হ৫২টি।
    নাটক৩৮টি

    উপন্যাস১৩টি
    প্রবন্ধ ৩৬ টি
    ছোটগল্প ৯৫ টি
    পিতাদেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
    মাতাসারদা দেবী
    ভাইবোন১৫ জন।(তিনি ৪র্থ)
        

                     জীবনী পড়ুন এবং নিজেকে গড়ুুন

    কোন মন্তব্য নেই

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728